শুক্রবার এ তালিকার দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে ঢাকা।
প্রতিবেশী দেশ ভারতের দিল্লি শহর রয়েছে তালিকার প্রথম স্থানে। এছাড়া তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে পাকিস্তানের লাহোর ও চীনের বেইজিং।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) সকাল ৯টায় ৩১২ স্কোর নিয়ে ঢাকার বাতাস বিবেচিত হয় ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে।
একিউআই স্কোর ৩০১ থেকে ৫০০ বা তারও বেশি হলে বাতাসের মান ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হয়। এ সময় স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ প্রত্যেক নগরবাসীর জন্য জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়।
এছাড়া একিউআই সূচকে ৫০-এর নিচে স্কোর থাকার অর্থ হলো বাতাসের মান ভালো। এ সূচকে ৫১ থেকে ১০০ স্কোরের মধ্যে থাকলে বাতাসের মান গ্রহণযোগ্য বলে ধরে নেয়া হয়। তবে একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে নগরবাসী বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থ রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।
প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়।
বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ এবং ওজোন (ও৩)।
আরও পড়ুন: জাতীয় পরিবেশ পদক ২০২০ পাচ্ছেন ৬ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান
জলবায়ু পরিবর্তন: বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান
ঢাকার বায়ু দূষণ: হাইকোর্টের আরও ৩ দফা নির্দেশনা
শীতের শুষ্ক মৌসুমে প্রতি বছরই ঢাকার বাতাস গুরুতর হয়ে উঠে। তবে এবার কোভিড-১৯ মহামারির কারণে চলাচল সীমিত এবং সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মনে করা হয়েছিল বাতাসের মানে উন্নতি হবে। কিন্তু নির্মাণ কাজের আধিক্যের কারণে বাতাস অস্বাস্থ্যকরই থেকে গেছে।
গ্রীষ্মমণ্ডলীয় মৌসুমি জলবায়ুর কারণে বাংলাদেশে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে বৃষ্টিপাত, উচ্চ তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতায় বৈচিত্র্য দেখা যায়।
জনবহুল ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বাতাস নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। মূলত নির্মাণ কাজের নিয়ন্ত্রণহীন ধুলা, যানবাহনের ধোঁয়া, ইটভাটা প্রভৃতি কারণে রাজধানীতে দূষণের মাত্রা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিশ্বব্যাংক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের এক প্রতিবেদনে ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান কারণ হিসেবে এ শহরের চারপাশে অবস্থিত ইটভাটাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সাধারণত বর্ষার মৌসুমে শহরের বাতাসের মানের উন্নতি হয়। তবে, ২০১৯ সালে বাংলাদেশ বাতাসের মানের দিক দিয়ে সবচেয়ে খারাপ সময় পার করেছে।
পিএম২.৫ এর জন্য বাংলাদেশকে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে। বিশ্ব বায়ু মান প্রতিবেদনে ২০১৯ সালে ঢাকা দ্বিতীয় দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় উঠে আসে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জন দুষিত বাতাসে শ্বাস নেন এবং বায়ু দূষণের কারণে প্রতি বছর প্রধানত নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটে।